Habiganj Government High School 3.45

5 star(s) from 1 votes
TinKuna Pukur Parh
Habiganj Sadar, 3300
Bangladesh

About Habiganj Government High School

Habiganj Government High School Habiganj Government High School is a well known place listed as Education in Habiganj Sadar ,

Contact Details & Working Hours

Details

জেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠগুলোর মধ্যে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় অন্যতম। ১৮৮৩ সালে শহরের কেন্দ্রস্থলে ৯.৫০ একর ভূমির উপর প্রতিষ্ঠিত স্কুলের পুরাতন একাডেমিক ভবনগুলো সহজেই দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষন করে। বাবু রসিক লাল সেন এম.এ ছিলেন স্কুলের প্রথম প্রধান শিক্ষক (১৮৮৩-৯৫)। এক সময়ে বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট গবেষক ও খ্যাতনামা সাহিত্যিক ড. দীনেশ চন্দ্র সেন এবং উপ মহাদেশের খ্যাতনামা বাগ্মী বিপিন চন্দ্র পাল স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন। ১৯১১ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। প্রাচীন এই স্কুলটি ১৮৪৩ সালে শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজার সংলগ্ন লস্করপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। লস্করপুরে তখন ছিল হবিগঞ্জ মহকুমার প্রধান কার্যালয়। ১৮৬৩ সালে ঐ প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এম.ই স্কুলে উন্নীত হয়। ১৮৮১ সালে মহকুমা সদর লস্করপুর থেকে হবিগঞ্জে স্থানান্তরিত হওয়ায় অন্যান্য অফিস আদালতের সাথে এ বিদ্যালয়টিও হবিগঞ্জ সদরে স্থানান্তরিত হয়। ১৯১১ সালে সরকারি করণের পর স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করেন কুঞ্জবিহারী ঠাকুরতা। বর্তমানে ৫৫ তম প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন নাজমুন নাহার খানম। উল্লেখ্য যোগ্য প্রধান শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন বিপিন চন্দ্র রায় বর্মন, রজনীচন্দ্র দাশ, খান সাহেব মফিজুর রহমান, রায় সাহেব অবিনাশ চন্দ্র চৌধুরী, আলহাজ¦ সৈয়দ হাফিজুর রহমান, আবুল ফয়েজ খান চৌধুরী, মুহম্মদ সানাওয়ার বখত চৌধুরী, মোঃ আব্দুল হাই, কাজী বদর উদ্দিন হায়দার, আব্দুল গফুর মন্ডল, মোঃ মহিউদ্দিন, মোঃ আব্দুস ছালাম, মোঃ গফফার আহমেদ, মোঃ হাবিবুল ইসলাম প্রমুখ।
১৯২২ সালে রহস্যজনক অগ্নিকান্ডে বিদ্যালয়ের দুটি প্রধান ভবন ভস্মীভুত হয়। এসময় প্রায় ৫ বছর শ্রেণীকক্ষ হিসেবে অস্থায়ী শেড ব্যবহার করা হয়। ১৯২২ সালের মেট্টিকুলেশন পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৫৫ জন ছাত্রের মধ্যে ৪৫টি প্রথম বিভাগ ৯টি দ্বিতীয় বিভাগ ও ১টি তৃতীয় বিভাগ সহ সকলেই কৃতকার্য হয়। এসব ছাত্রের মধ্যে ৫ জন স্টার মার্কস এবং ৪৬ জন লেটার মার্কস নিয়ে পাশ করে। এই বিস্ময়কর ফলাফলের জন্য বিদ্যালয়টি তদানীন্তন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করায় বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন নির্মানের জন্য ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দকৃত অর্থে ১৯২৫ সালে নির্মান শুরু হয়ে ১৯২৭ সালে ৪টি সুদৃশ্য ভবনের নির্মান কাজ শেষ হয়।
স্কুলে বর্তমানে প্রধান শিক্ষক সহ মোট ৩৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। ২০১১ সালে চালু হওয়া দুই শিফটে বর্তমানে ছাত্র সংখ্যা ১৭০৬ জন। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে ৬টি একাডেমিক ভবন, অডিটরিয়াম, স্কাউট ও ল্যাবরেটরি ভবন, ছাত্র হোস্টেল ও হোস্টেল সুপারের বাসভবন। মুসলিম ছাত্রাবাসের জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনটি এখন শিক্ষকদের অস্থায়ী বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ১৯২১-২২ সালে প্রধান শিক্ষকের জন্য নির্মিত বাসভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় তা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ব্যায়ামাগার, মসজিদ, বিজ্ঞান ভবন। লাইব্রেরীতে রয়েছে ৫৪৫০টি বই। বড় ৪টি পুকুরের একটিতে এক সময়ে লাল শাপলা ফুলের সমারোহ থাকলেও এখন আর তা নেই। প্রচুর গাছপালা ও ফুলের বাগানে সুশোভিত স্কুলে দিনশেষে দেখা যায় বিভিন্ন জাতের পাখির আনাগোনা। পাখিদের বংশ বিস্তারের জন্য বড় বড় গাছগুলোতে বেধে দেয়া হয়েছে মাটির কলসি। অতীতের মতই বর্তমানেও বিভিন্ন পরীক্ষায় চমকপ্রদ ফলাফল করছে পরীক্ষার্থীরা। এস.এস.সি পরীক্ষায় ২০১৪ সালে ৯৮.৯১%, ২০১৫ সালে ৯৯.৫৩% এবং ২০১৬ সালে ১০০% কৃতকার্য হয়। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা ও প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষায়ও ১০০% কৃতকার্যের রেকর্ড রয়েছে। স্কুলের প্রাক্তন কৃতি শিক্ষার্থীরা এখন দেশ বিদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ২০০২ সালে স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের জাকজমকপূর্ন পুণর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়।

-লেখক: #মনসুর_উদ্দিন_আহমেদ_ইকবাল সাংবাদিক ও আইনজীবি। জজ কোর্ট হবিগঞ্জ।