দেশে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় মাদ্রাসা শিক্ষা আজ এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। এর পরেও মাদ্রাসা শিক্ষার ভিত্তি তার কাঙ্খিত মানে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এ দাবি করা সমীচীন হবে না। কারণ, মাদ্রাসা শিক্ষা এখনও বহুবিধ সমস্যায় নিমজ্জিত এবং সমাজের যে কোন স্তরে প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ প্রমাণের মত সুযোগ্য ছাত্র-ছাত্রী তৈরীর উপযোগী একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা খুব সামান্যই মাদ্রাসাসাগুলোতে বিদ্যমান রয়েছে। অধিকন্তু যাকাত, ফিৎরা ও বিত্তবানদের বদান্যতার উপর নির্ভরশীলতার ঐতিহ্যগত ধারনার কারণে মাদ্রাসা শিক্ষা এখনও তার সামাজিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। বিশেষ করে সমাজের একজন স্বচ্ছল ও দায়িত্বশীল মানুষ তার সন্তানকে ঠিক যে মানে গড়ে তুলতে ইচ্ছুক সেই পরিবেশের অনুপস্থিতির কারণে ঐকান্তিক ইচ্ছা থাকা সত্বেও আপন সন্তানকে মাদ্রাসা অঙ্গনের বাইরে সাধারণ বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে বাধ্য হচ্ছেন। আর একবার যখন সন্তানকে সাধারন বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয তখন শত ইচছা থাকা সত্বেও তাকে আর পুনর্বার মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনা সম্ভবপর হয় না। এ ছাড়া, সত্য কথা বলতে কি, প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা না থাকায় সামান্য ব্যতিক্রম বাদে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা আরবী, ইংরেজী এমন কি মাতৃভাষার ক্ষেত্রেও কাঙ্খিত দক্ষতা অর্জনে সক্ষম হয় না। এসব দিক বিবেচনায় সাধারণ শিক্ষার ন্যায় মাদ্রাসা শিক্ষার ক্ষেত্রেও কে.জি ও ক্যাডেট পদ্ধতির প্রতিষ্ঠান স্থাপনা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। আলহামদুলিল্লাহ্! ইতোমধ্যেই ঢাকায় এ ধরনের উদ্যোগের সফল সূচনা হয়েছে। আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে উত্তরবঙ্গের এই অভাব পুরণে ২০০০ সালে সর্বপ্রথম বগুড়ায় একদল প্রগতিশীল ও সুশিক্ষিত তরুণ আলিমের যৌথ প্রচেষ্টায় যাত্রা শুরু হয় “বগুড়া ক্যাডেট ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা” সংক্ষেপে “বিসিআইএম” নামে এক ব্যতিক্রমী প্রতিষ্ঠানের। নতুন শতাব্দীর চাহিদা পুরণে ইল্ম আমল ও আখলাকের অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী সত্যিকার ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া তৈরীর এই মহান উদ্যোগ আল্লাহ তাআলা কবুল করুন, এই আমাদের কামনা, আল্লাহুম্মা আমীন।