স্বপ্নপুরী - Swopnopuri 6.02

4.3 star(s) from 332 votes
Sopnopuri
Dinajpur, 5280
Bangladesh

About স্বপ্নপুরী - Swopnopuri

Contact Details & Working Hours

Details


It is situated from Dinajpur town 52k.m south Nawabganj upozil">স্বপ্ন নয়, অথচ স্বপ্নের মতো সুন্দর নিরিবিলি এক মোহন মায়াবী স্বপ্নময় ভূবন স্বপ্নপুরী। যা দর্শনার্থী, পর্যটক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে।
এ স্বপ্নপুরী দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলাধীন আফতাবগঞ্জের খালিশপুর মৌজায় প্রায় ৪০০ একর জমির ওপর বিস্তৃত এই দৃষ্টিনন্দন পিকনিক বা বিনোদন স্পট। ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জনপ্রিয় বংশীবাদক মো. দেলোয়ার হোসেন মাত্র ৭ একর ৩৮ শতাংশ জমি নিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্বপ্নপুরীর যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে তা ৪০০ একর জমি বিস্তৃত পেয়েছে।
এটি দিনাজপুর জেলা শহর থেকে সড়ক পথে ৩৩ মাইল বা ৫২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ৯নং কুশদহ ইউনিয়নের খালিশপুর মৌজায় অবস্থিত। ফুলবাড়ি উপজেলা শহর থেকে স্বপ্নপুরীর দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। দিনাজপুর থেকে ফুলবাড়ি আফতাবগঞ্জ হাট হয়ে সম্পূর্ণ পাকা রাস্তা দিয়ে এখানে আসা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষ চিত্তবিনোদনের জন্য বা পিকনিক করার জন্য এখানে এসে থাকেন। বিশেষ করে শীত মৌসুমে বেশি জনসমাগম ঘটে।
স্বপ্নপুরীতে এসে পৌঁছলে স্বাগত জানাবে স্বপ্নপুরীর গেটে দণ্ডায়মান দুটি বিশাল পরীর প্রতিকৃতি মূর্তি। এ দুটি পরী তাদের দু’ডানা প্রসারিত করে ও একহাত উঁচু করে গেটের দু’পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গেট পেরিয়ে পথের দু’ধারে বিভিন্ন গাছের সমারোহ। চোখে পড়বে সারি সারি দেবদারু গাছ। এর দু’পাশে আবার নারিকেল গাছের সারি।
মনোমুগ্ধকর পরিবেশে নিস্তব্ধ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে হয়তো মনে পড়ে যেতে পারে সেই গানটি- ‘এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হতো, তুমি বল তো’। এখানে রয়েছে কৃত্রিম হ্রদ, পাহাড়, লেক, উদ্যান, বৈচিত্র্যপূর্ণ গাছগাছালি ও ফুলের সমারোহ, শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানা, কৃত্রিম পশুপাখি, ফুলবাগিচা, ইটখোলা, কৃত্রিম ঝরণা, ঘোড়ার রথ, হংসরাজ সাম্পান, শালবাগান, খেলামঞ্চ, নামাজঘর। এছাড়া রয়েছে কুঞ্জ, ভাস্কর্য, ডাকবাংলো, মাটির কুটির, বাজার প্রকৃতিতে বাংলাদেশের মানচিত্র। যেন এক মোহন-মায়াবী স্বপ্নিল ভূবন।
কয়েক ভাগে বিভক্ত করা এই স্বপ্নময় জগতের পথ চলতে চলতে দেখা যায়, ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম কিংবা ঘাড়গুঁজো বসে থাকা অবসন্ন কৃষকের ভাস্কর্য। সেখানে সারিবদ্ধ চেয়ার, টুল বসানো আছে। হংসরাজ সাম্পানে চড়ে স্বচ্ছ নীল পানির লেকে হারিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। সাম্পানে যেতে যেতে দেখা যায় কোথাও একাকী দাঁড়িয়ে আছে নারী, মাথা নিচু করে বসে আছে হতাশাগ্রস্ত যুবক অথবা জলের মাঝে বিশালকৃতি কচুপাতা।

এরপর রয়েছে কৃত্রিম পশু দুনিয়া। প্রবেশ পথে দুটি ড্রাগন সাদর সম্ভাষণ জানানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে সেখানে। দেয়ালে চুন-সুরকি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বিলুপ্তপ্রায় হিংস্র প্রাণীদের প্রতিকৃতি। এরপর দুয়েক পা ফেলতেই চমকে উঠতে হয়। সামনেই পথ জুড়ে হাঁ করা এক নর-করোটি। এই নর-করোটির মুখের ভেতর দিয়েই মূল পশু দুনিয়ার পৌঁছাতে হবে। এখানে রয়েছে নানা কৃত্রিম পাহাড় ও ঝর্ণা। ঝর্ণার পানি গড়িয়ে একটি ছোট জলাশয়ে পড়ছে। লেকের পাশে রয়েছে ২৫০০ বর্গফুট বিস্তৃত বাংলাদেশের মানচিত্র, যা ইট-সিমেন্ট দিয়ে সুন্দরভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে।
বর্তমান চলচ্চিত্র স্পট হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছে স্বপ্নপুরী। ইতোমধ্যে এখানে কয়েকটি চলচিত্র চিত্রায়িত হয়েছে। নয়ন জুড়ানো নিরিবিলি এ স্বপ্নপুরীতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পর্যটকরা এখানে আসতে শুরু করেছে।
এই স্বপ্নময় স্বপ্নপুরীতে ইচ্ছা করলেই দুয়েকদিন থাকাও যাবে। এ জন্য রয়েছে নিশিপদ্ম, নীলপরী, সন্ধ্যাতারা, রজনীগন্ধা মেঠোঘর এবং ভিআইপি কুঞ্জ নামের পাঁচটি মনোমুগ্ধকর ডাকবাংলো। অবসর যাপনের জন্য এসব ডাকবাংলো ভাড়া দিতে হয়।
অবসর যাপনের জন্য এসব ডাকবাংলো ভাড়া দিতে হয়। ঘরপ্রতি ভাড়া ৪০০ টাকা থেকে ১৬০০ টাকা (২৪ ঘণ্টার জন্য)। ডাকবাংলোগুলো এসি ও নন-এসি রুম রয়েছে।