প্রতিবন্ধীদের মধ্যে শিক্ষার দিক থেকে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা। দৃষ্টিহীন হওয়ার কারণে তাদের শিক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষা উপকরণ অন্যদের তুলনায় পুরো আলাদা। তাদের পড়াশোনা করতে হয় স্পর্শ পদ্ধতি বা ব্রেইল পদ্ধতিতে। ব্রেইল পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত পাঠক ও শ্রুতিলেখকের সাহায্য ছাড়া দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের পড়াশোনা করা খুবই কষ্টসাধ্য। কিন্তু এই পদ্ধতিটি অধিকাংশের কাছে অপরিচিত এবং ব্রেইল উপকরণও সহজলভ্য নয়। অন্যদিকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের চলাফেরা কষ্টসাধ্য হওয়ার কারণে অনেক শিশু দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্যে বিশেষায়িত বিদ্যালয়ে আসতে পারেনা। ফলে শারীরিকভাবে পিছিয়ে থাকা শিশু গুলো আবারো পিছিয়ে পড়ে শিক্ষার দিক থেকে।
আমরা এই শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব নিতে চাই। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করার পথে সবচেয়ে বড় বাধা হল তাদের ভিন্ন শিক্ষাপদ্ধতির ব্রেইল মেথড। আমরা ইতিমধ্যে তিনদিনের কর্মশালার মাধ্যমে ব্রেইল কর্মশালা শিখে নিয়েছি। তিনদিন ব্যাপী কর্মশালার মাধ্যমে ব্রেইল পদ্ধতি শিখতে সহায়তা করেন সরকারী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ। প্রাথমিকভাবে আমরা দশজন শিশুকে দিয়ে আমাদের কার্যক্রম শুরু করছি যারা বিভিন্ন সমস্যার কারণে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। স্রোতের সদস্যরা সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে তাদের বাসায় গিয়ে তাদের শিক্ষার ব্যাপারে সহায়তা করবে। আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের মানবিক গুনাবলীর উন্নয়ন নিয়েও কাজ করব নিয়মিত।
শারিরীক ক্ষমতায় অন্যদের সমকক্ষ হতে না পারলেও শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় অন্য শিশুদের ছাড়িয়ে যাবে এই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুরা এইটাই “স্রোত” দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচির উদ্দেশ্য। ভিন্নভাবে সক্ষম এই শিশুদের বুকের ভেতর লালন করা স্বপ্নগুলো একদিন সত্যি হবে এইটাই প্রত্যাশা।