‘রেজভীয়া দরগাহ্ শরীফ’ একটি নাম, একটি ঐতিহ্য, একটি প্রতিষ্ঠান। শরীয়ত ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়ে একটি দ্বীনী মারকায। মহান রবের উদ্দেশ্য পূরণে মানব জাতীকে স্রষ্টার প্রতি মনোনিবেশ করানো, মৃত হৃদয়কে রাসূল প্রেমের মাধ্যমে জাগ্রত করার এবং তদ্বারা গাফেলদের অন্তরকে বেলায়তের অমীয় সূধায় পরিতৃপ্ত করার একটি মাধ্যম।
নামকরণ :
কুরআন পাকে মুমিনদেরকে লক্ষ্য করে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন- رضى الله عنهم ورضوا عنه(আল্লাহ তাঁদের উপর সন্তুষ্ট, আর তাঁরাও আল্লাহ’র বিধানে সন্তুষ্ট)। ‘অর্থাৎ তাঁরা’ رضوى (রেদ্বভী, যা প্রচলিত রেজভী)।
অপরদিকে চতুর্দশ শতাব্দীর মহান মুজাদ্দীদ, ইমামে আহলে সুন্নাত, আ’লা হযরত শাহ্ আহমাদ রেজা খাঁন ফাযেলে বেরলভী-এর সাথে ত্বরীকতের সিলসিলা পরম্পরায় আবদ্ধ হিসেবে রেজভী। আর এর থেকেই রেজভীয়া।
‘দরগাহ্’ শব্দটি ফারসী। যার অর্থ- ধ্যানমগ্নতার স্থান, আধ্যাত্মিক সাধনার স্থান, বুযুর্গানে দ্বীনের মিলন মেলা প্রভৃতি।
‘শরীফ’ শব্দটি সম্মানিত, মর্যাদাবান বা বরকতময় অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে।
অর্থাৎ, মসলকে আ’লা হযরত ভিত্তিক মুমিনদের শরয়ী ও আধ্যাত্মিক বরকতময় প্রাণকেন্দ্র হিসাবে নেত্রকোণা জেলার সতরশ্রীতে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘রেজভীয়া দরগাহ্ শরীফ’।
ফিরক্বা :
হাদীসে ঘোষিত ৭৩ ফিরক্বার মধ্যে একমাত্র নাজাতপ্রাপ্ত বেহেশ্তী দল আহ্লুস্ সুন্নাত ওয়াল জামায়াত-এর উপর এ দরগাহ্ শরীফ প্রতিষ্ঠিত।
মাযহাব :
মাযহাবগত দিক থেকে ইমাম আ’যম আবু হানিফা (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) প্রতিষ্ঠিত শ্রেষ্ঠ হানাফী মাযহাবের অনুসারী।
ত্বরীকা :
শ্রেষ্ঠ ও গ্রহনযোগ্য ক্বাদেরিয়া, চিশতীয়া, নক্বশবন্দীয়া ও মুজাদ্দেদীয়া’র উপর প্রতিষ্ঠিত। তবে তা’লিম-তরবিয়ত, সবক-ওয়াজিফা প্রদান করা হয় মহান ক্বাদেরিয়া ত্বরীকা’র উপর।
ইলমে কালাম :
কালাম বা ই’তিক্বাদের বিষয়ে প্রখ্যাত ইমাম আবু মানছুর মাতুরিদী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)-এর মতাদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত।
এককথায়, রেজভীয়া দরগাহ্ শরীফ মসলকে আ’লা হযরতের উপর প্রতিষ্ঠিত তথা ক্বাদেরী, হানাফী, মাতুরিদী, সুন্নী মতাদর্শ ভিত্তিক পরিচালিত।
অধিনস্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ :
রেজভীয়া দরগাহ্ শরীফ-এর কার্যক্রম ও লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের অংশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয় অনেক প্রতিষ্ঠান। তন্মধ্যে প্রধান দু’টি হলো-
১. বাংলাদেশ রেজভীয়া তা’লিমুস্ সুন্নাহ্ বোর্ড ফাউন্ডেশন (গভ. রেজি. নং এস-১১২৮২/২০১১)।
২. বাংলাদেশ রেজভীয়া উলামা পরিষদ।
এছাড়াও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দরগাহ্ শরীফ কর্তৃক পরিচালিত হয়ে আসছে অনেক মসজিদ, মাদরাসা, খানকাহ্, সমাজ সেবামূলক সংগঠন প্রভৃতি।