উলিপুর, কুড়িগ্রাম - Ulipur, Kurigram 5.25

4.4 star(s) from 137 votes
Ulipur 0 Km Post, KC Road
Ulipur, 5620
Bangladesh

About উলিপুর, কুড়িগ্রাম - Ulipur, Kurigram

উলিপুর, কুড়িগ্রাম - Ulipur, Kurigram উলিপুর, কুড়িগ্রাম - Ulipur, Kurigram is a well known place listed as City in Ulipur , Non-profit Organization in Ulipur , Landmark in Ulipur ,

Contact Details & Working Hours

Details

উলিপুর উপজেলা সদর কুড়িগ্রাম জেলা সদর হতে ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। দেশের অন্যতম বৃহৎ এ উপজেলার আয়তন ৫০৪.১৯ বর্গ কিলোমিটার। এর পশ্চিমে রংপুর জেলার পীরগাছা ও গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারী উপজেলা। পূর্বে রৌমারী উপজেলা ও আসামের গোয়ালপাড়া জেলা এবং উত্তরে কুড়িগ্রাম সদর ও রাজারহাট উপজেলা। এছাড়া এর পশ্চিমে তিস্তা, পূর্বে ব্রক্ষ্মপুত্র ও উত্তর পূর্বাংশে ধরলা নদী প্রবাহিত।

১৯০২ সালে উলিপুর থানার সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে এটি উপজেলা হিসেবে পরিচিত।
১৪ টি ইউনিয়ন পরিষদ, ১৪৭ টি মৌজা এবং ৪১৮ টি গ্রাম নিয়ে উলিপুর উপজেলা পরিষদ গঠিত আছে।

উলিপুর উপজেলার ইউনিয়ন সমূহঃ
→ দলদলিয়া ইউনিয়ন।
→ দূর্গাপুর ইউনিয়ন।
→ পান্ডুল ইউনিয়ন।
→ বুড়াবুড়ী ইউনিয়ন।
→ ধরনীবাড়ী ইউনিয়ন।
→ ধামশ্রেনী ইউনিয়ন।
→ গুনাইগাছ ইউনিয়ন।
→ বজরা ইউনিয়ন।
→ তবকপুর ইউনিয়ন।
→ হাতিয়া ইউনিয়ন।
→ বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন।
→ সাহেবের আলগা ইউনিয়ন।
→ থেতরাই ইউনিয়ন।

১৯৯৮ সালের ৬ অক্টোবর ০৯টি ওয়ার্ড, ১৫টি মহল্লা ও ২৭.৩৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয়
উলিপুর পৌরসভা। পৌর শহরের প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ২৭৩৬ জন।
শহরের অধিবাসীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৩৩.৫২%।

উলিপুর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৩৫২৪২০ জন (প্রায়)। পুরুষ-১৭৬৭০০ জন ও মহিলা-১৭৫৭২০ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৭০০ জন। মোট জনসংখ্যার ৮৯.৭৯% মুসলিম, ৮.৬৫% হিন্দু এবং ১.৫৬% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। উপজেলায় ৫৮৫ টি মসজিদ ও ১৪ টি মন্দির আছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহের মধ্যে উলিপুর মসজিদুর হৃদা, উলিপুর শাহী জামে মসজিদ, দলদলিয়ার কাজী মসজিদ, পাঁচ পীরের ৩ গমবুজ মসজিদ,
শ্রী শ্রী গোবিন্দ জিও মন্দির, ধামশ্রেণীর শ্রী শ্রী সিদ্ধেশবরী শিব কালীমন্দির উল্লেখযোগ্য।

উপজেলায় শিক্ষার হার ৩৩.৪০%। মোট কলেজের সংখ্যা ১০টি (সরকারি-১টি), হাইস্কুল
৪৬টি (সরকারি-১টি), মাদ্রাসা ৫৫টি,
সরকারি পাথমিক বিদ্যালয় ১১৮টি,
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১২৪টি,
বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১টি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমুহের মধ্যে উলিপুর এমএস স্কুল
অ্যান্ড কলেজ, উলিপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, গুনাইগাছ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, উলিপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ, আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহির পণ্ডিত উচ্চবিদ্যালয়, নতুন অনন্তপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, এম এ মতিন কারিগরি ও কৃষি কলেজ, কলেজিয়েট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং উলিপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ উল্লেখযোগ্য।

উলিপুরে পাবলিক লাইব্রেরি ২ টি, ক্লাব ২০ টি,
সিনেমা হল ২ টি, মহিলা সংগঠন ১ টি এবং ১০
টি খেলার মাঠ আছে। স্থানীয় ভাবে সাপ্তাহিক
জুলফিকার ও কলম প্রকাশিত হয়।

উলিপুর একটি কৃষি প্রধান উপজেলা। মোট
জনগোষ্ঠীর ৪৫.৫৭% কৃষি, ২৯.০৩% কৃষি শ্রমিক, ২.০১% অকৃষি শ্রমিক, ৪.১৭% চাকরি, ৮.৫১%
ব্যবসা এবং ১০.৭১% অন্যান্য পেশার সাথে সম্পৃক্ত। চাষযোগ্য জমির পরিমান ২৯৫৪২.৭০ হেক্টর। এক ফসলি ১৮%, দো ফসলি ৬০%, তিন ফসলি ২২%। সেচের আওতায় আবাদি জমি ৮৫%। ৬৩.৭% লোক ভৃমিহীন,
ক্ষুদ্র চাষি ২৪.৫%, মধ্যম চাষি ৬.৯% এবং বড়
চাষি ৪.৯%। মাথাপিছু আবাদি জমির পরিমান ০.০৯ হেক্টর। প্রধান কৃষি ফসল ধান, পাট, গম, আলু, পটল, করলা, পিঁয়াজ, রসুন, পান। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদির মধ্যে রয়েছে সরিষা, কাউন, তিল, তিসি, মসুর, খেসারি।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, জাম, নারিকেল,
পেঁপে, কলা, সুপারি।
প্রধান রপ্তানি দ্রব্য পাট, সুপারি, পান, পিঁয়াজ,
রসুন।
উলিপুরে ১০ টি মৎস্য খামার, ৫২ টি হাঁস-মুরগির
খামার এবং ১ টি হ্যাচারি আছে।

যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ
→ পাকা রাস্তা ৪৭ কিমি।
→ আধাপাকা রাস্তা ৩ কিমি।
→ কাঁচা রাস্তা ৮১৯ কিমি।
→ রেলপথ ১৫ কিমি।
→ নৌপথ ১০ নটিক্যাল মাইল।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পালকি, গরু,
মহিষ ও ঘোড়ার গাড়ি।

শিল্প ও কলকারখানাঃ
→ আটা কল ২ টি।
→ হাচকিং মিল ১১ টি।
→ বরফ কল ১ টি।
→ টেড্ডডল পাম্প তৈরির কারখানা ১ টি।
(উলিপুরের জ্কনক নরেন্দ্র নাথ দেব ১৯৭৮ সালে এইপামপ উদ্ভোবন করেন যাকে স্থানীয়ভাবে ঢেকিকল বলা হয়। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা এই সেচ যন্ত্র ব্যবহার করে)
→ কুটিরশিল্প তাঁত ২৫০ টি।
→ বাঁশের কাজ ৬০০ টি।
→ স্বর্ণকার ২০ টি।
→কামার ৬০ টি।
→ কুমার ২০ টি।
→ কাঠের কাজ ৫০০ টি।
→ সেলাই কাজ ২২০ টি।
→ বিড়ি ১ টি।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রঃ
→ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ টি।
→ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ১৪ টি।
→ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ৪ টি।
→ চক্ষু হাসপাতাল ১ টি।
→ মাতৃমঙ্গল ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ১ টি।

দর্শনীয় স্থান সমূহঃ
→ টুপামারী পুকুর (জিয়া পুকুর)।
→ ধাম শ্রেণী মন্দির।
→ শ্রী শ্রী গোবিন্দ জীউর মন্দির।
→ জালার পীরের দরগাহ।
→ সাত দরগাহ মাজার।
→ শহীদ গোবিন্দ স্মৃতিফলক।
→ তিস্তা নদী।
→ নাও ডাঙ্গার বিল।
→ কাজী মসজিদ (১২১৪ হিজরী)।
→ রানী স্বর্ণময়ী সরোবর (উলিপুর কাচারী পুকুর
পার্ক)।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলিঃ
১৯২০ সালে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে উলিপুরের বেশকিছু ব্যক্তিত্ব সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে একজন ঋষিকেষ মজুমদার কারাবরণ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় উলিপুরের পূর্ব দিকে চৌমুনী বাজারের নিকট পাকবাহিনীর একটি কনভয়ে অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করে। পাকবাহিনীরা মন্ডলের হাট, বুড়াবুড়ি, অনন্তপুর ও হাতিয়ায় আক্রমণ চালিয়ে প্রায় ৭০০ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। উপজেলার মন্ডলের হাট নামক স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাকসেনাদের এক সম্মুখযুদ্ধে সাতজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্নঃ
→ গণকবর ৩ টি (উলিপুর ডাকবাংলো সংলগ্ন,
হাতিয়া দাগার কুটি ও ধরণীবাড়ী মধুপুর)।
→ স্মৃতিস্তম্ভ ৩ টি।

উলিপুর উপজেলা সংসদীয় এলাকা হিসেবে কুড়িগ্রাম-৩ নামে পরিচিত। মোট
ভোটার সংখ্যা ১৯৪৬৯০ জন (প্রায়)। পুরুষ ৯৮৫০৭ জন, মহিলা-৯৬১৮৩ জন।

ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, উলিপুর
উপজেলার সভ্যতা বহু প্রাচীণ। এই এলাকায়
মহারাণী স্বর্ণময়ীর অবস্থান, ভবানী পাঠকের
আগমন, দেবী চৌধুরাণীর বজরায় আগমন, বাহারবন্দ কাচারী, রাণী সত্যবতীর ধামশ্রেণী সিদ্বেশরী মন্দির, দলদলিয়া কাজীরচক
মসজিদ এবং আসাম অভিযানে মুঘল সম্রাটের উলিপুর উপজেলাকে ব্যবহার প্রাচীণ সভ্যতার পরিচয় বহন করে।

সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে উলিপুর উপজেলার অবদান
কম নয়। এই অঞ্চলের ভাওইয়া, চটকা, দোতরা কুশান গান জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃত।যেসব
সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা উলিপুর উপজেলায় কাজ
করছে সেগুলো হলো উলিপুর ভাওয়াইয়া একাডেমী, ললিত কলা একাডেমী, উদিচি শিল্পী গোষ্ঠী, উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী এবং পাবলিক লাইব্রেরী।

(...সূত্রঃ বাংলা পিডিয়া ও ইন্টারনেট।...)