জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা সদর হতে মাত্র ৬/৭ কিঃ মিঃ পূর্বে গোপীনাথপুরে একটি অতি প্রাচীন মন্দির রয়েছে । এটি প্রায় পাঁচশ বছরের পুরানো মন্দির । এটি গোপীনাথ ঠাকুরের মন্দির নামের পরিচিত । যতদুর জানা যায় ১৪৮৯ সালে নব দ্বীপের ঢ়াড়ীয় রাম দেব চক্রবর্তী স্ত্রীর গর্ভে সুদেব ও ভূদেব নামে দুই ছেলের জন্ম হয় । হরীভক্ত এই দুই ভাই ভারতের নদীয়া জেলার শান্তিপুরে অদৈত্য গোস্মামী কাছে দীক্ষা নিতে গেলে তিনি তার স্ত্রীর কাছে দীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দেন ।
কিন্তু পূর্ন মাসী ভগপতি কোন পুরুষকে মন্ত্র দিতে অস্বীকৃতি জানান । উপায় না দেখে দুই ভাই নারী বেশ ধারন করে নন্দিনী প্রিয়া ও জঙ্গলী প্রিয়া নাম নিয়ে দীক্ষা গ্রহন করেন । এরপর জঙ্গলী প্রিয়াকে ভারতে রেখে নন্দিনী প্রিয়া এই গোপীনাথপুরে এসে জঙ্গলের ভিতর গোপীনাথের বিগৃহ স্থাপন করে পূজা অরচনা শুরু করেন ।
১৫০০ শতব্দীর শেষ দিকে বাংলার শাসক সুলতান আলাউদ্দীন হুসেন শাহ প্রজাদের দুঃখ নিজ চোখে দেখার উদ্দেশ্যে এখানে আসেন এবং গভীর অরন্যে একজন পুরুষকে নারীবেশে আরাধনা করতে দেখেন । তিনি নন্দিনী প্রিয়ার আসল পরিচয় এবং ভিক্ষা করে অতিথি আপয়নে মুগ্ধ হয়ে তাকে তাম্র পত্রে গোপীনাথ দেবতার নামে পাঁচ নল মানে ১২৯ বিঘা জমি দান করেন ।
পরবতীতে নন্দিনী প্রিয়ার সেই পূজা স্থানে তৈরী করা হয়েছে গোপীনাথপুর মন্দির । এই মন্দিরে কাঠের গোপীনাথের বিগৃহটি শাধক নন্দিনী প্রিয়ার নিজ হাতে স্থাপিত । তবে বাদশার দেওয়া তাম্র পত্রটি মুক্তিযুদ্ধের সময় হারিয়ে গেছে । এই মন্দিরে ১২ মাসে ১৩ পূজা হয় । সেই থেকে এখানে এখানো পর্যন্ত একই ভাবে মন্দিরের পক্ষ থেকে অতিথি সেবা হয়ে আসছে ।
গোপীনাথ মন্দিরকে ঘিরে শ্রী কৃষ্ণের দোলযাত্রা উপলক্ষে প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে বিশাল মেলা বসে যা বাংলাদেশের প্রাচীন এবং বড় মেলা ।