খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের মরনোত্তর বিচার দাবী পরিষদ 2.47

5 star(s) from 3 votes
Daudkandi Pouroshova 12
Comilla,
Bangladesh

About খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের মরনোত্তর বিচার দাবী পরিষদ

খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের মরনোত্তর বিচার দাবী পরিষদ খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের মরনোত্তর বিচার দাবী পরিষদ is a well known place listed as Organization in Comilla ,

Contact Details & Working Hours

Details

ইতিহাসের পাতায় যেমন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকে কিছু প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিবর্গের নাম যাঁরা তাদের জীবনকে মানুষের কল্যানে উৎসর্গ করে গেছেন তেমনি ভাবে লেখা থাকে কিছু দানবের নাম যারা তাদের নিষ্ঠুর আচরণের কারণে ইতিহাসের কলঙ্কজনক ঘটনার খল নায়কে পরিচিতি লাভ করে যুগে যুগে মানুষের ঘৃনার পাত্র হয়েছেন। তাদের নেতিবাচক চরিত্র আমাদের জাতীয় অর্জন ম্লান করে দিয়েছে। এরা জাতীয় খল নায়ক। জাতীয় জীবনে এই সকল মানুষকে চিহ্নিত করতে হয় আগামী প্রজন্মের জন্য।
ইতিহাসের এই খল নায়ক বাংলার মীর জাফর খন্দকার মোশতাক আহমেদ। বিশ্বের অনেক ট্রাজিক নায়কদের মতো হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ইতিহাসের এই খল নায়ককে চিনতে ভুল করার কারণে নিজের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে তার চরম মূল্য দিয়েছিলেন।
খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯১৮ সালের কোন এক দিনে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার দশপাডা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয থেকে আইন বিষয়ে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯৪২ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। ব্রিটিশ বিরোধি আন্দোলনে তিনি সক্রিয ভূমিকা রাখেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওযামী মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম মহাসচিব। ১৯৫৪ সালে তিনি যুক্তফ্রন্টের মনোনিত প্রার্থি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কেন্দ্রিয সরকার ১৯৩৫ সালের আর্টিকেল ৯২-এ ব্যবহার করে যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙ্গে দিলে ১৯৫৪ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয। ১৯৫৫ সালে তিনি মুক্ত হয়ে আবার সংসদে যুক্তফ্রন্টের চিফ হুইপ হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করার পর তিনি আবার বন্দি হন। ১৯৬৬ সালে ছয-দফার সমর্থন করায তাকে আবার কারাবরণ করতে হয। দেশের আটটি রাজনৈতিক দল ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ গঠন করলে তাতে খন্দকার মোশতাক আহমেদ পশ্চিম পাকিস্তান অংশের সমন্নযক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে রাওযালাপিন্ডিতে আইয়ুব খানের ডাকা গোল টেবিল বৈঠকে তিনি আওযামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি পাকিস্তান জাতীয সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধের সময মুজিবনগর সরকারে তিনি পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষযক মন্ত্রনালযরে দ্বায়িত্ব লাভ করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারে তিনি বিদ্যুত, সেচ ও বন্যা নিযন্ত্রন মন্ত্রনালযরে দ্বায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে তাকে অর্থমন্ত্রীর দ্বাযত্বি দেওযা হয। তিনি বাকশালের কার্যকারি কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার পরোক্ষ মদদে কিছু সেনা কর্মকর্তা কর্তৃক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হবার পর মোশতাক আহমেদ নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। এই পদে তিনি মাত্র ৮৩ দিন ছিলেন। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত তিনি অঘোষিতভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দাযত্বি পালন করেন। রাষ্ট্রপতির দ্বাযত্বি নেবার পর মোশতাকের সহায়তায় জিয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন। তিনি "জয বাংলা" স্লোগান পরিবর্তন করে এর স্থলে "বাংলাদেশ জিন্দাবাদ" স্লোগান চালু করেন। এই সময তিনি "বাংলাদেশ বেতার" এই নাম পরিবর্তন করে "রেডিও বাংলাদেশ" করেন। তার শাসনামলে চার জাতীয নেতা সৈযদ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মোঃ মনসুর আলী ও এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয কারাগারে (৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয। মোশতাক আহমেদ ১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর সেনাবিদ্রোহের দ্বারা অপসারিত হন।
১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্র্যাটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষডযন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয। তার বিরুদ্ধে ২ টি দুর্নিতির অভিযোগ আনা হয এবং আদালত তাকে ৫ বছরের শাস্তি প্রদান করে। জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয রাজনীতি শুরু করেন। ৫ মার্চ ১৯৯৬ সালে এই নেতা মৃত্যু বরণ করেন। একজন মানুষ বিশেষ করে মুসলমান হিসেবে মৃত ব্যক্তির কৃত সকল অপরাধের ক্ষমার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা কর্তব্য হলেও ইতিহাসের এই ঘৃন্য খল নায়কের জন্য ঘৃনাসহ করুণা।

OTHER PLACES NEAR খুনি খন্দকার মোশতাক আহমেদের মরনোত্তর বিচার দাবী পরিষদ

Show more »