সময় ২০১৪, ১৯ ফেব্রুয়ারী। ডিমলা রানী বৃন্দারানী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র মোতাওয়াক্কীল বিল্লাহ শাহ বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল। একসময় তার বন্ধু সম্পদ বলে উঠলো যে ২১ ফেব্রুয়ারি চল কোথাও বেড়াতে যাই। মোতাওয়াক্কীল বললো দেখ শহীদ দিবসে এগুলো না করলেই নয়। চল আমরা নতুন কিছু করি। ঐ দিন শহীদ মিনারে ফুল দেই। সম্পদ বললো বেশ ভাল তো। তো পরের দিন সকালে সম্পদ ও সিয়াম ছুটে গেল এক বন্ধুর নার্সারীতে। সেখান থেকে দুই ব্যাগ ফুল নিয়ে আসলো। এরপর আর একজনের বাড়ি থেকে ফ্রীজের ককসীট এনে বানানো হয় ফুলের মালা। এখন চিন্তার বিষয় যে, ফুল তো দিবো কিন্তু কার হয়ে। সবাই চিন্তায় পরে গেল। চল আমরা আমাদেরি ক্লাব (ফান ক্লাব) থেকে দেই। সাথে সাথেই একজন বলে উঠলো না। আমরা নতুন কোন সংগঠন খুলি।
এরপর সকল চিন্তা ভাবনা শেষ করে একজনের কাছে ১০০/- টাকা ধার নেই। সে টাকায় আর্টের দোকানে গিয়ে ব্যানার তৈরি করি। আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাতে নাম দেই ওয়ার্ক ফর চিল্ড্রেন। এরপর ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সকলেই ইসলামিয়া ডিগ্রী কলেজ মাঠে উপস্থিত হই। এরপর ৭জন ছেলে সহ ১টি প্রভাত ফেরী করি। সবাই ঠাট্টা বিদ্রুপ করছিল। তারা ভাবছিল আমরা কিছু ভুল করছি না তো। যাদের বুকে ঐ সময়ে এত্ত সাহস তাদের কি কোন ভীতি আটকাতে পারে। অবশেষে তারা আগের জায়গায় এসে গল্প শুরু করে। সেখানে কতিপয় কিছু বকাটে এসে আমাদের সংগে তর্ক শুরু করে। একসময় তারা আমাদের উপর আক্রমন করে। মোতাওয়াক্কীল বিল্লাহ প্রতিবাদ করতে গিয়ে সে ও তার বন্ধু ললিত মারাত্মক পাষবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়। খবর পেয়ে তার বাবা ছুটে আসে। বিভিন্ন জায়গায় বিচার প্রার্থনা ক্রমশো হতাশ হয়ে উঠে।
অবশেষে একদল রাজনৈতিক ট্যাগধারী বিচার প্রদানের আশায় সাপলুডু খেল খেলে। তারা বলছিল আপনারা যদি বেশি বাড়াবাড়ি করেন তাহলে তাদের সংগঠনকে জংগী সংগঠন হিসেবে চালিয়ে দেয়া হবে। এরপর সুদীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচার কাজ সম্পন্ন হয়। এরপর আবার নতুন করে পথ চলা। সবাইকে ডেকে সংগঠনের নাম পরিবর্তন করা হলো ফাইড ফর চিল্ড্রেন। পাশে এসে দাড়ালো মোহাই মেনুল ইসলাম রনি। তিনি দেখালেন নতুন করে স্বপ্ন। সেই সব ছোট্ট শিশুরা শুরু করলো নতুন ভাবে সাংগঠনিক কাজ। তারা ফেসবুকে লেখা লেখি শুরু করে দিল। এর ফলশ্রুতিতে আবারো কিছু কতিপয় হিংস্র সূর্য সন্তানরা ঝাপিয়ে পড়লো টানা দুই দিন তার ফেসবুক আইডি তাদের কব্জায় রেখে দিল। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংগঠনিক তারা মুছে দিল। কিন্তু সে সংকটন ময় মুহুর্তে পাশে এসে দাড়ালো আবারো তার বন্ধুরা। সে আবারো নতুন আইডি ও নতুন পেজ চালু করলো। নতুন করে শুরু হলো তাদের পথ চলা। মোহাই মেনুল ইসলাম রনির নির্দেশনায় চালিয়ে যেতে থাকলো ফাইট ফর চিল্ড্রেন এর সকল কার্যক্রম। সেই ২০১৪-২০১৭ সাল পর্যন্ত এসেছে কত সাইক্লোন, কত আইলা, কত সিডর। দমাতে পারে নি কাউকে। দমাতে পারে নি তাকে। দমাতে পারে নি ফাইট ফর চিল্ড্রেনকে।